ডাটাবেজ কি?
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) দেশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে সরকারি সংস্থা হিসাবে বেসরকারইি খাতের উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সেবামূলক সহায়তা দিয়ে থাকে। পাশাপাশি, বিসিক দেশের ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের যাবতীয় তথ্য সেবা সরকারি ও বেসরকারি দপ্তর/প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক- আথিক প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান- সংস্থায়, স্থানীয় পরিষদ, জনপ্রতিনিধি, গবেষক ও সংশ্লিষ্টদের নিয়িমতভাবে দিয়ে আসছে। কিন্ত বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক বাবহারের এ সমেয় শিল্প সংশ্লিষ্ট তথ্য সকলের দোরগোড়ায় দ্রুত ও সহজে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য সামনে রেখে বিসিক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের a2i (Aspire to innovate) প্রোগ্রামের সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ডের আওতায় দেশের সমস্ত অঞ্চলের ক্ষুদ্র,কুটির ও মাঝারi` শিল্পের একটি অনলাইন ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ (GIS-based Online Database for Small, Cottage and Medium Industry) গ্রহন করে। কারণ, দেশে বর্তমানে কমেবশী প্রায় ১০ লক্ষ ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প রয়েছে। দেশের প্রায় সমস্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এ সমস্ত শিল্পের পূর্ণাঙ্গ তথ্য এক স্থান হতে সংগ্রহ করার কোন সুযোগ না থাকায় নতুন শিল্প উদ্যোক্তা, গবেষক, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দেশের শিল্পায়ন তথা আর্থ- সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে নানা বিড়ম্বনার সম্মুখিন হয়ে থাকে। যা প্রকারান্তরে দেশের শিল্পায়নকে বাঁধাগ্রস্ত করে। এ অবস্থা নিরসনে বিসিকের অনলাইন ডাটাবেজ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে । আর এ ডাটাবেজে দেশের সমস্ত অঞ্চলের শিল্পের ভৌগলিক অবস্থান নির্দেশক তথ্যও সন্নিবেশিত হবে যা একনজরে দেশের শিলল্পবস্থার বাস্তব চিত্র উপস্থাপনে যথার্থ ভূমিকা রাখবে বলে বিসিক মনে করে।
ডাটাবেজের সুবিধা
উদ্যোগটি বাস্তবায়িত হলে অনলাইনে যে কোন স্থান হতে খুব সহজে ও অল্প সময়ে দেশের ক্ষুদ্র,কুটির ও মাঝারী শিল্পের প্রায় যাবতীয় সব তথ্য এক স্থান হতে দ্রুত সংগ্রহের সুযোগ সৃষ্টি হবে যা ইতোপূর্বে দেশে গড়ে উঠে নাই। এ উদ্যোগটি বাস্তবায়িত হলে অন্যান্য সুবিধার পাশাপাশি নিম্নরুপ সুবিধা পাওয়া যাবে।
-
উদ্যোগটি বাস্তবায়িত হলে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প খাতের প্রায় সমুদয় তথ্য অনলাইনে একই স্থান হতে দ্রুত পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। শিল্পের তথ্য সংগ্রহের জন্য সময়, খরচ ও বিভিন্ন দপ্তরে যাওয়া আসার প্রয়োজন হবে না।
-
এ ডাটাবেজ থেকে দেশের ও দেশের বাইরে যে কোন স্থান হতে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে শিল্প স্থাপনে আগ্রহী উদ্যোক্তা দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারবেন। বর্তমানে এ ধরণের ডাটাবেজ না থাকায় বিভিন্ন দপ্তর হতে তথ্য সংগ্রহ করার বিড়ম্বনার কারনে অনেক সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তা হতাশ হয়ে শিল্পউদ্যোগ বাতিল করতে বাধ্য হয় যা দেশের শিল্পায়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
-
এলাকাভিত্তিক (জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন) শিল্পের অবস্থা এ সিস্টেমের মাধ্যমে মূহুর্তে জানা যাবে যা এলাকা ভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহন ও জাতীয় বাজেট প্রনয়নে সহায়ক হবে। স্থানীয় জন প্রতিনিধি, উন্নয়ন সংস্থা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি এ সিস্টেম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এলাকার উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন যা এতিদন সম্ভব ছিল না। উপরন্ত,স্থানীয় ও জাতীয় বাবসায়ী সংগঠন (চেম্বার), শিল্প মালিক সমিতিসমূহ অনেক তথ্য সহেজই ডাটাবেজের মাধ্যমে সংগ্রহ করার সুযোগ পাবেন।
-
স্বল্প শিক্ষিত ও অল্প আয়ের উদ্যোক্তা , নারী এবং শ্রমিকগণ স্থানীয়ভাবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প স্থাপন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সংক্রান্ত অনেক তথ্য এ সিস্টেম থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন। তদুপরি, এলাকার শিল্পের অবস্থান ও ঠিকানা সংগ্রহের মাধ্যমে স্থানীয় দরিদ্র জনগোষ্ঠী লাভজনক মূল্যে কাঁচামাল সরবরাহ ও পণ্য বিপণনসহ বিভিন্ন বিষেয় প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে উপকৃত হবেন।
-
গবেষক, উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রনলয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প খাতের প্রায় সমুদয় হালনাগাদ তথ্য একই স্থান হতে সংগ্রহ করার সুযোগ পাবেন যা জাতীয় উন্নয়ন নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনা প্রনয়নে সহায়তা করবে।
-
নতুন ও বর্তমান শিল্প প্রতিষ্ঠান এ ডাটাবেজ থেকে লাভজনক উৎপাদন ও বিপণেনর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহের সুযোগ পাবে যা শিল্পের সম্প্রসরনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্পখাতের অবদান বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।